রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভুয়া ছবি ও খবর প্রচার করা হচ্ছে: সুচি
মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি অবশেষে রোহিঙ্গাদের নিয়ে মুখ খুলেছেন। বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তিনি রোহিঙ্গা মুসলিমদের দুর্দশা নিয়ে ‘ভুয়া সংবাদ’ ছড়ানোকেই দায়ী করেছেন।
সু চি বলছেন, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যের সবাইকেই তার সরকার সুরক্ষা দিচ্ছে। একইসঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতিকে ভুয়া ছবি ও খবরের মাধ্যমে বিকৃত করে সন্ত্রাসীদের স্বার্থে প্রচার করা হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভয়াবহ মানবিক সঙ্কটের মধ্যেও এতটুকু বিচলিত নন সু চি। আগের মতোই উল্টো সুরে তিনি দায়ী করেছেন ‘বিদ্রোহীদেরকে’, সেনাবাহিনীকে নয়।
তার দাবি, বিভ্রান্তিকর তথ্য বিপুল পরিমাণে ছড়িয়ে ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমস্যা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় সুচি রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রথম মন্তব্যে একথা বলেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
প্রকাশিত সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সু চি এরদোয়ানকে বলেছেন, তার সরকার ইতোমধ্যেই যতটা সম্ভব রাখাইনের সব মানুষকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে।
সু চি বলেছেন, “মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক সুরক্ষা থেকে কাউকে বঞ্চিত করার অর্থ কী, তা আমরা বেশিরভাগ মানুষের চেয়ে ভালোভাবে জানি। আর তাই আমরা দেশের সব মানুষের জন্য সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিত করছি। এটি শুধু রাজনৈতিক নয়, সামাজিক ও মানবিক অধিকারও বটে।”
বিবৃতিতে সু চি আরও বলেন, “রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে প্রচুর অপ-তথ্য এবং ছবি ছড়ানো হচ্ছে। এগুলো সন্ত্রাসীদের স্বার্থ রক্ষা করছে। ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করাই এর উদ্দেশ্য।”
তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রীর টুইটারে পোস্ট করা নিহত রোহিঙ্গার ছবির প্রসঙ্গ টেনে সু চি দাবি করেন, ওই ছবি মিয়ানমার নয়, অন্য কোথাও তোলা।
গত ২৪ অগাস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে এ পর্যন্ত ৪শ’ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে প্রায় ৯০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। সু চি পালিয়ে আসা এ রোহিঙ্গাদের নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
রোহিঙ্গাদের ঢলের মধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের অংশে বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশের সাথে সীমান্তের একাংশ জুড়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ভূমিমাইন বসানোরও খবর এসেছে। সেনাবাহিনীর সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে পালানো রোহিঙ্গারা যেন আর মিয়ানমারে ফিরতে না পারে সেজন্যই মাইন পাতা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ